চৌধুরী হারুনুর রশীদ, রাঙামাটি: অদৃশ্য ও ভূয়া প্রকল্পের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে রাঙামাটি জেলা পরিষদের বিরুদ্ধে একই দিনে চারটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন দূদক। চারটি মামলায় আসামী করা হয়েছে রাঙামাটি জেলা পরিষদের সদস্য সুবীর চাকমা, উপ-সহকারী প্রকৌশলী রিগ্যান চাকমা,সহকারী প্রকৌশলী জ্যোতিময় চাকমা,বিরল বড়ুয়া নিবার্হী প্রকৌশলী সাবেক নিবার্হী প্রকৌশলী কাজী আব্দুস সামাদ (বর্তমানে সিলেট এলজিইডিতে কর্মরত) ঠিকাদার, ইউপি চেয়ারম্যান, ৯ জনকে মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। দূদক রাঙামাটিস্থ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সহকারী পরিচালক আহামদ ফরহাদ হোসেন নিজেই উক্ত চারটি মামলা দায়ের করেছেন।
রাঙামাাটি জেলা পরিষদের সদস্যসহ চার প্রকৌশলী ভূষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ, রাঙমাটি জেলা পরিষদের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স অমলেন্দু চাকমা’র স্বত্তাধিকারী অমলেন্দু চাকমা, মেসার্স নাংচিং এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্তাধিকারী চিংহেন রাখাইন, মেসার্স সম্মৃদ্ধি এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্তাধিকারী মিলন তালুকদার’কে আসামী করে এই চারটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। রাঙামাটির সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে পরিচালক (ডিডি) জাহিদ কামাল প্রতিবেদককে মুঠোফোনে ঘটনার সত্যতা জানিয়ে বলেন,বরকল উপজেলার একই দিনে ৯ জনকে অভিযুক্ত করে ৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
দুদকের ডিডি সূত্রে জানাগেছে, বরকলের ৪নং ভূষণছড়া ইউনিয়নের অর্ন্তগত কামিনী চাকমার জমির উপর মৎস্য বাধঁ ও পাঁকা সেচ ড্রেন নির্মাণ প্রকল্পের মাধ্যমে ৮ লাখ ৫৮ হাজার ৮৫৩ টাকা, বরকল উপজেলাধীন সুবলং বাজারে পানীয় জলের ব্যবস্থাকরণসহ গভীর নলকূপ স্থাপন প্রকল্পের মাধ্যমে ৬ লাখ ৫১ হাজার টাকা, বরকল উপজেলাধীন সুবলং ইউনিয়নে সুবলং কমিউনিটি সেন্টার ঘর ও পাঁকা সিড়ি নির্মাণ প্রকল্পের মাধ্যমে ৮ লাখ ৩৭ হাজার টাকা, বরকল উপজেলাধীন পূর্ব এরাবুনিয়া মৎস্য বাঁধ হইতে হারুন টিলা এলাকার আহাদ এর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার নামক ভূয়া প্রকল্পের মাধ্যমে ৯ লাখ ৩৯ হাজার ৯৫৩ টাকা পরস্পর যোগসাজসে অপরাধমূলক অসদাচরণ এবং অপরাধমূলক বিশ^াস ভঙ্গের মাধ্যমে উপরোক্ত টাকাগুলো আত্মসাৎ করে দন্ড বিধির ৪০৯/১০৯ তৎসহ ১৯৪৭ সালের দূর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে মামলার গুলোর এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ৭৫ কার্যদিবস সময়কালে উপরোক্ত মামলাগুলোর সার্বিক বিষয়টি তদন্তে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় উদ্বর্তন কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে এই মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছে।
দুদকের সংশ্লিষ্ট মামলার সুত্রে জানাগেছে, রাঙামাটি জেলা পরিষদের সদস্য সবির কুমার চাকমাকে তিনটি মামলায় আসামী করা হয়েছে। অপরদিকে চার মামলাতেই জেলা পরিষদের উপসহকারী প্রকৌশলী রিগ্যান চাকমা,সহকারী প্রকৌশলী জ্যোতিময় চাকমা, নির্বাহী প্রকৌশলী বিরল বড়ুয়া, নাম মামলায় রয়েছে। বরকলের স্থানীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নাংচিং এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী চিংহেন রাখাইনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে দুই মামলায়। ইউপি চেয়ারম্যান মামুন, ঠিকাদার অমলেন্দু চাকমা ও মিলন তালুকদারের নাম একটি করে মামলায় রাখা হয়েছে।দুদকের মামলার খবরে জেলা পরিষদের সংশ্লিষ্ট সকলের মধ্যে চরম আতংক বিরাজ করছে ।
উল্লেখ্য যে, রাঙামাটি বিভিন্ন উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানে আয়কর ফাকি দিতে মাত্র কয়েকজন উপজাতীর নামে শতকোটি টাকার উন্নয়ন কাজ ও অদৃশ্য প্রকল্পের বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।